চলমান তীব্র দাবদাহে স্কুলগামী শিশুর সুরক্ষায় কি করবেন?

বাংলাদেশে চলমান প্রচণ্ড গরমে এক সপ্তাহ স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশনার পর আবারও স্কুল-কলেজ চালু হওয়ার ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছে। এই প্রচণ্ড গরমে বাচ্চাদের স্কুলে যাতায়াতের সময়ে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। অনেক স্কুল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত থাকলেও সব স্কুলে তো আর সে সুযোগ নেই। তাই বাড়তি একটু দুশ্চিন্তা থেকেই যায়। এই বাড়তি দুশ্চিন্তার জায়গা থেকেই শিশুর যত্নের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। শিশুর পোশাক থেকে শুরু করে তার আরামের সবকিছুর দিকেই খেয়াল রাখা জরুরি। আমাদের সামান্য ভুলে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি তো থাকেই সঙ্গে আরো যুক্ত হয় নানা অনুষঙ্গ। এসব বিষয় সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি।


গ্রীষ্মের গরমে স্কুল বাচ্চাদের কিভাবে ঠান্ডা রাখা যায়?

১. স্কুল ড্রেস নিয়ে আপনার বিবেচনা

স্কুলের ড্রেসকোড তো আর আলাদা করা যায় না। সেক্ষেত্রে অবশ্যই স্কুল ড্রেস সুতির কাপড় দিয়ে বানিয়ে দিবেন। স্কুলে যাওয়ার আগে শিশুদের মাথায় ক্যাপ দিন। চোখ রক্ষার জন্য সানগ্লাস আর ত্বকে সানস্ক্রিন লোশন লাগিয়ে দেবেন। এতে করে রোদের তাপ সরাসরি তাদের গায়ে লাগবে না। ওদের সঙ্গে সবসময় ছোট একটি ছাতা দেবেন। স্কুলে প্রয়োজনের বেশি বই বহন করতে দেবেন না। গরমে শিশুদের চুল বড় না রাখাই ভালো। মেয়েদের চুল আটকে রাখত যেনে সুবিধা হয় এমন করে বেধে দিবেন। জুতার ব্যাপারটিও মাথায় রাখবেন। জুতা যেন আরামদায়ক হয়। জুতা যদি খোলামেলা হয় তবে আরো ভাল হবে।

২. প্রচুর বিশুদ্ধ পানি পানে উৎসাহ

এই গরমে বিশুদ্ধ পানি পান করাবেন আপনার শিশুকে। স্কুলগামী শিশুদের ব্যাগে ছোট বোতলে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে দেওয়া জরুরি। পানির বোতলটি পরিষ্কার রাখুন। স্কুলে যাওয়ার পথে শিশুকে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি, আইসক্রিম, কোমল পানীয় খাওয়া থেকে বিরত রাখুন। রাস্তায় বিভিন্ন কুলফি, মালাই বা লেবুর শরবতও তাদের খেতে দেবেন না। স্কুল থেকে ফেরার পর চিনি, লেবুর শরবত অথবা দইয়ের ল্যাসি বানিয়ে দিতে পারেন। খাবার স্যালাইনও দিতে পারেন। বাইরের কোনো স্ন্যাকস বা ভাজাপোড়া এই তীব্র গরমে খেতে দেবেন না।

৩. স্কুলের টিফিনে দিন বাড়তি যত্ন

এই গরমে শিশুর টিফিন নিয়েও বাড়তি দুশ্চিন্তা রাখা দরকার। বিশুদ্ধ পানি তো দেবেনই সঙ্গে মৌসুমি ফল দিলে ভালো হয়। কমলা, পেঁপে বা অন্য মৌসুমি ফল স্লাইস করে দিন। সঙ্গে দই বা অন্য কিছু দিতে পারেন। সকালের নাস্তাতে সবজির প্রাধান্য রাখুন।

৪. তোয়ালে আর টিস্যু সঙ্গে দিন

সন্তানকে যতটা সম্ভব ঘাম থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন এবং স্কুলে অবস্থ্নরত অবস্থায় যেন তারা বেশী না ঘামে সেদিকে নজর রাখতে বলুন। যেহেতু তারা ছোট সেহেতু এই ঘাম থেকে দূরে রাখার কাজটি সহজ না। স্কুলে থাকলে গরম এবং ঘাম ভয়াবহভাবে কাবু করতেই পারে। তাই বাচ্চাদের সাথে তোয়ালে বা টিস্যু দিন। প্রয়োজনে মেয়েদের বেল্টের সাথে এবং ছেলেদের পেন্টের পকেটে একটি রুমাল দিয়ে দিন। মাঝে মধ্যে টেপের ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ, হাত ধুতে বলবেন। সেই সাথে তাদের যেন হাত-মুখ মোছার সুযোগ থাকে তা নিশ্চিত করুন।


৫. হিটস্ট্রোক সম্পর্কে সচেতনতা

মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, দ্রুত হৃদস্পন্দন এবং অত্যধিক ঘামের মতো লক্ষণগুলো হিটস্ট্রোকের লক্ষণ এবং উপসর্গ এই সম্পর্কে আপনার বাচ্চাদের শিক্ষা দিন। যদি তারা গরমের কারণে অসুস্থ বোধ করতে শুরু করে তবে তাদের ছায়াযুক্ত জায়গায় থাকতে এবং শরীর হাইড্রেটেড রাখতে শেখান। যদি তারা বা তাদের সহপাঠীরা তাপ-সম্পর্কিত অসুস্থতার কোনো লক্ষণ দেখা যায় তাহলে তাদের শিক্ষক বা স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানাতে উৎসাহিত করুন। এছাড়া, স্কুলের মাঠে অথবা বাইরে খেলার সময় ছায়াযুক্ত এলাকায় বিরতি নেওয়ার গুরুত্ব এবং দিনের উষ্ণতম ক্ষণগুলোতে কঠোর শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলার গুরুত্ব তাদের মনে করিয়ে দিন। হিটস্ট্রোক সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে, আপনি চলমান গরম আবহাওয়ার গরমের সময় আপনার সন্তানদের গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতা প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারেন।

আজ এতটুকুই লিখলাম। আমাদের পাবলিসিং টিম থেকে আপনার এবং আপনার সন্তানদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। এই তীব্র তাপদাহে যতটুকু সম্ভব ঠান্ডা থাকার চেষ্টা করুন। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করুন তিনি যেন আমাদের উপর রহমত বর্ষণ করেন। ধন্যবাদ।

আর্টিকেলটির মূল উৎস: ShineMat.com

এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)

নবীনতর পূর্বতন