আবারও সার্চ ইঞ্জিনের শীর্ষে গুগল, জেনে নিন গুগলের আধিপত্য, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ

সার্চ ইঞ্জিনের জগতে গুগল এখনও তার অপ্রতিদ্বন্দ্বী অবস্থান ধরে রেখেছে। ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত গুগলের দখলে ছিল সার্চ ইঞ্জিন বাজারের প্রায় ৯০ শতাংশ। স্ট্যাটকাউন্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে গুগলের বাজার শেয়ার খুব কম সময়ের জন্যই ৯০ শতাংশের নিচে নেমেছে। ডেস্কটপ, ট্যাবলেট এবং স্মার্টফোন প্রায় সব ডিজিটাল ডিভাইসেই গুগল শীর্ষ সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে তার অবস্থান অক্ষুণ্ণ রেখেছে।


গুগল সার্চ ইঞ্জিনের বাজার শেয়ার, গুগলের আধিপত্য বিশ্বজুড়, গুগল বনাম মাইক্রোসফট বিং সার্চ ইঞ্জিন, রাশিয়ায় ইয়ানডেক্সের জনপ্রিয়তা, গুগল সার্চ ইঞ্জিনের ভবিষ্যৎ পরিবর্তন

বিশ্বজুড়ে প্রতি ১০ জন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে ৯ জনই গুগল ব্যবহার করেন তথ্য অনুসন্ধানের জন্য। ২০১০ সাল থেকে গুগল সার্চ ইঞ্জিন বাজারে আধিপত্য ধরে রেখেছে। মাইক্রোসফটের বিং তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও, গুগলের তুলনায় এর বাজার শেয়ার খুবই নগণ্য, যা মাত্র ৩.৯৪ শতাংশ। রাশিয়ার ইয়ানডেক্স ২.৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তবে রাশিয়ার বাজারে ইয়ানডেক্সের আধিপত্য অনেক বেশি, যেখানে এটি সার্চ মার্কেটের ৭২.৭৪ শতাংশ শেয়ার দখল করে রেখেছে।

এছাড়া তালিকায় চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে ইয়াহু ও বাইডু, যথাক্রমে ১.২৪ শতাংশ এবং ০.৮১ শতাংশ শেয়ার নিয়ে। প্রাইভেসি-কেন্দ্রিক সার্চ ইঞ্জিন ডাকডাকগো ০.৭৯ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। বিং, ইয়ানডেক্স, ইয়াহু, বাইডু এবং ডাকডাকগো একত্রিতভাবেও গুগলের বাজার শেয়ারের সমান হতে পারেনি।

গুগলের সার্চ ইঞ্জিনের জনপ্রিয়তা ডিভাইস অনুযায়ী কিছুটা ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ, ডেস্কটপে গুগলের বাজার শেয়ার ৮০.৩৫ শতাংশ, ট্যাবলেটে এটি ৮৯.৫০ শতাংশ, আর স্মার্টফোনে এই শেয়ার সর্বোচ্চ ৯৩.৯৬ শতাংশ।

তবে, গুগলের এই বিশাল সাফল্যের সঙ্গেই বিরাট চ্যালেঞ্জও রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টিট্রাস্ট মামলায় গুগলের একচেটিয়া আধিপত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ২০২৩ সালে আদালতে রায় দেয়া হয়েছে যে, গুগল অবৈধভাবে বাজারে প্রতিযোগিতা নষ্ট করছে। মার্কিন সরকার গুগলকে বিভাজনের প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে কোম্পানিকে ক্রোম ব্রাউজার বিক্রি করতে বাধ্য করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই জানান, অতি শ্রীগ্রই গুগলের সার্চ ইঞ্জিনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। ২০২৫ সালের শুরুতেই নতুন প্রযুক্তি চালিত সার্চ ইঞ্জিনের দেখা মিলবে। ইতোমধ্যে গুগল AI টেকনোলজি ব্যবহার করে তাদের সার্চ প্ল্যাটফর্মে নতুন বৈশিষ্ট্য যোগ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে AI জেনারেটেড সারাংশ, উন্নত লেন্স টুল এবং ভিডিওভিত্তিক অনুসন্ধানের সুবিধা।


উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে ল্যারি পেজ ও সার্গেই ব্রিনের হাত ধরে গুগল যাত্রা শুরু করেছিল কেবল একটি সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে। বর্তমানে এটি একটি বিশাল বিজনেস করপোরেশন, যার সেবার মধ্যে জিমেইল, গুগল ম্যাপস, গুগল ড্রাইভ, ইউটিউব এবং অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম অন্যতম। গুগল তার প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও নতুন উদ্ভাবন দিয়ে বিশ্বব্যাপী মানুষকে তথ্য ও প্রযুক্তির সুবিধা প্রদান করে চলেছে, যার প্রায় সকল কিছুই বিনামূল্যে।

এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)

নবীনতর পূর্বতন