মহাকাশের রহস্য উন্মোচনে আবারও যুগান্তকারী এক আবিষ্কার। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির (ইএসএ) ‘ইউক্লিড টেলিস্কোপ’ সম্প্রতি একটি বিরল মহাজাগতিক ঘটনা ধারণ করেছে, যা ‘আইনস্টাইন রিং’ নামে পরিচিত। এই ঘটনাটি আলবার্ট আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের একটি চমকপ্রদ প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয়। আইনস্টাইনের তত্ত্ব অনুযায়ী, মহাকাশে বিশাল ভরের কোনো বস্তুর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আলোর গতিপথকে বাঁকিয়ে দিতে পারে। এই ঘটনাটি ঘটে যখন একটি দূরবর্তী গ্যালাক্সি থেকে নির্গত আলো কোনো সামনের গ্যালাক্সির মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে যায় এবং তা বেঁকে গোলাকার রিংয়ের আকার ধারণ করে। এই ধরনের ঘটনা এতই বিরল যে, বিশাল মহাকাশে মাত্র কয়েক ডজন নিখুঁত আইনস্টাইন রিং দেখা গেছে।

২০২৩ সালের জুলাই মাসে মহাকাশে যাত্রা শুরু করা ইউক্লিড টেলিস্কোপের মূল লক্ষ্য ছিল ‘ডার্ক ইউনিভার্স’ নিয়ে গবেষণা করা, অর্থাৎ মহাবিশ্বের অদৃশ্য ডার্ক ম্যাটার এবং ডার্ক এনার্জির রহস্য উদঘাটন। তবে টেলিস্কোপের যন্ত্রপাতি ক্যালিব্রেট করার সময়ই প্রথম ডেটা পাঠানোর পর বিজ্ঞানী ব্রুনো আলতিয়েরি লক্ষ্য করেন যে, এনজিসি-৬৫০৫ গ্যালাক্সির চারপাশে একটি অদ্ভুত আলোর বলয় দেখা যাচ্ছে। পরবর্তীতে তিনি নিশ্চিত হন যে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ আইনস্টাইন রিং। এই আবিষ্কারটি বিজ্ঞানীদের জন্য একটি বড় অর্জন, কারণ আইনস্টাইন রিং শুধু একটি দৃষ্টিনন্দন মহাজাগতিক ঘটনা নয়, বরং এটি মহাবিশ্বের গঠন এবং ডার্ক ম্যাটারের পরিমাণ বোঝার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।
আইনস্টাইন রিং বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা ডার্ক ম্যাটারের পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারেন। গবেষক কনর ওরিয়র্ডন ব্যাখ্যা করেন, ‘রিংয়ের আকার নির্ভর করে সামনের গ্যালাক্সির মোট ভরের ওপর। যদি শুধুমাত্র দৃশ্যমান তারার ভর বিবেচনা করা হয়, তাহলে রিংয়ের আকার অনেক ছোট হতো। কিন্তু ডার্ক ম্যাটারের উপস্থিতি যোগ করেই কেবল এত বড় রিং সম্ভব।’ এই বিশ্লেষণ থেকে বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন যে, এই গ্যালাক্সির মোট ভরের প্রায় ৯০ শতাংশ তারা এবং ১০ শতাংশ ডার্ক ম্যাটার। টেক্সাস এঅ্যান্ডএম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাস্টিন স্পিলকারের মতে, এটি একটি সাধারণ গ্যালাক্সির জন্য স্বাভাবিক অনুপাত।
ইউক্লিড টেলিস্কোপের মিশন এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এই টেলিস্কোপটি ৬ বছরের মিশনে রয়েছে এবং এই সময়ের মধ্যে এটি মহাবিশ্বের প্রায় ৩৫ শতাংশ আকাশ স্ক্যান করবে। এর মূল লক্ষ্য হল ডার্ক এনার্জির প্রভাবে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ নিয়ে সবচেয়ে বিস্তারিত থ্রিডি ম্যাপ তৈরি করা। ওরিয়র্ডন বলেন, ‘সম্ভবত ইউক্লিড হাজার হাজার আইনস্টাইন রিং খুঁজে পাবে। এত বিপুল পরিমাণ ডেটা আমাদের কাছে আগে কখনো ছিল না। এটি জ্যোতির্বিজ্ঞানের নতুন যুগের সূচনা করবে।’
এই আবিষ্কারটি শুধু বিজ্ঞানীদের জন্য নয়, সাধারণ মানুষের জন্যও একটি উৎসাহব্যঞ্জক ঘটনা। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মহাবিশ্ব কতটা বিস্ময়কর এবং রহস্যময়। আইনস্টাইন রিংয়ের মতো ঘটনাগুলো আমাদের মহাবিশ্বের গভীর রহস্য বুঝতে সাহায্য করে এবং বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। ইউক্লিড টেলিস্কোপের মাধ্যমে আমরা হয়তো আগামী দিনে আরও অনেক অজানা রহস্যের সমাধান পাব, যা আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
আর্টিকেলটির মূল উৎস: ShineMat.com

২০২৩ সালের জুলাই মাসে মহাকাশে যাত্রা শুরু করা ইউক্লিড টেলিস্কোপের মূল লক্ষ্য ছিল ‘ডার্ক ইউনিভার্স’ নিয়ে গবেষণা করা, অর্থাৎ মহাবিশ্বের অদৃশ্য ডার্ক ম্যাটার এবং ডার্ক এনার্জির রহস্য উদঘাটন। তবে টেলিস্কোপের যন্ত্রপাতি ক্যালিব্রেট করার সময়ই প্রথম ডেটা পাঠানোর পর বিজ্ঞানী ব্রুনো আলতিয়েরি লক্ষ্য করেন যে, এনজিসি-৬৫০৫ গ্যালাক্সির চারপাশে একটি অদ্ভুত আলোর বলয় দেখা যাচ্ছে। পরবর্তীতে তিনি নিশ্চিত হন যে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ আইনস্টাইন রিং। এই আবিষ্কারটি বিজ্ঞানীদের জন্য একটি বড় অর্জন, কারণ আইনস্টাইন রিং শুধু একটি দৃষ্টিনন্দন মহাজাগতিক ঘটনা নয়, বরং এটি মহাবিশ্বের গঠন এবং ডার্ক ম্যাটারের পরিমাণ বোঝার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।
আইনস্টাইন রিং বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা ডার্ক ম্যাটারের পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারেন। গবেষক কনর ওরিয়র্ডন ব্যাখ্যা করেন, ‘রিংয়ের আকার নির্ভর করে সামনের গ্যালাক্সির মোট ভরের ওপর। যদি শুধুমাত্র দৃশ্যমান তারার ভর বিবেচনা করা হয়, তাহলে রিংয়ের আকার অনেক ছোট হতো। কিন্তু ডার্ক ম্যাটারের উপস্থিতি যোগ করেই কেবল এত বড় রিং সম্ভব।’ এই বিশ্লেষণ থেকে বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন যে, এই গ্যালাক্সির মোট ভরের প্রায় ৯০ শতাংশ তারা এবং ১০ শতাংশ ডার্ক ম্যাটার। টেক্সাস এঅ্যান্ডএম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাস্টিন স্পিলকারের মতে, এটি একটি সাধারণ গ্যালাক্সির জন্য স্বাভাবিক অনুপাত।
ইউক্লিড টেলিস্কোপের মিশন এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এই টেলিস্কোপটি ৬ বছরের মিশনে রয়েছে এবং এই সময়ের মধ্যে এটি মহাবিশ্বের প্রায় ৩৫ শতাংশ আকাশ স্ক্যান করবে। এর মূল লক্ষ্য হল ডার্ক এনার্জির প্রভাবে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ নিয়ে সবচেয়ে বিস্তারিত থ্রিডি ম্যাপ তৈরি করা। ওরিয়র্ডন বলেন, ‘সম্ভবত ইউক্লিড হাজার হাজার আইনস্টাইন রিং খুঁজে পাবে। এত বিপুল পরিমাণ ডেটা আমাদের কাছে আগে কখনো ছিল না। এটি জ্যোতির্বিজ্ঞানের নতুন যুগের সূচনা করবে।’
এই আবিষ্কারটি শুধু বিজ্ঞানীদের জন্য নয়, সাধারণ মানুষের জন্যও একটি উৎসাহব্যঞ্জক ঘটনা। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মহাবিশ্ব কতটা বিস্ময়কর এবং রহস্যময়। আইনস্টাইন রিংয়ের মতো ঘটনাগুলো আমাদের মহাবিশ্বের গভীর রহস্য বুঝতে সাহায্য করে এবং বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। ইউক্লিড টেলিস্কোপের মাধ্যমে আমরা হয়তো আগামী দিনে আরও অনেক অজানা রহস্যের সমাধান পাব, যা আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
আর্টিকেলটির মূল উৎস: ShineMat.com
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।